প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপত্বিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা।
রবিবার (৮ অক্টোবর), ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত সভায় সংসদ সদস্যদের মৃত্যুজনিত কারনে শুন্য হওয়া চট্টগ্রাম অঞ্চলের দুই আসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও লক্ষীপুর-৩ আসনের উপ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে শিক্ষক নেতা মো. শাহজাহান আলম ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে ক্ষমতাসীন দলটি প্রার্থী করেছে মোহাম্মদ গোলাম ফারুককে।
৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য এই উপ নির্বাচনটির বিজয়ীরা মাত্র এক মাস সময় পাবেন একাদশ জাতীয় সংসদে দায়িত্ব পালনের।
দ্বাদশ সংসদে নিজেদের প্রার্থী বাছাইয়ে অনেক আগে থেকেই তৎপর আওয়ামী লীগ, মনোনয়ন বোর্ডের সভায় আলোচনা হয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সম্ভাব্যদের নিয়েও।
সভা সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে,দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের আসনগুলোর প্রায় প্রত্যেকটিতে দলীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য একাধিক প্রার্থী থাকায় শেষ মূহুর্তে বিভিন্ন সমীকরণ কষতে হচ্ছে মনোনয়ন বোর্ডকে।
এরই প্রেক্ষিতে, কক্সবাজারে চারটি আসন ধরে রাখতে হলে করণীয় নির্ধারণে আলোচনা করেছেন নৌকার নীতিনির্ধারকেরা।
বর্তমান চার সাংসদও ফের মনোনয়ন প্রত্যাশী, পাশাপাশি প্রতিটিতেই আছেন দুই-তিনজন সম্ভাব্য হেভিওয়েট।
জোটকে বহুল গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলো ছাড় দিতে নারাজ নীতনির্ধারণি পর্যায়ের প্রবীণ নেতারা, তবে এক্ষেত্রে প্রাধান্য পেতে পারে সভাপতির সিদ্ধান্ত ও পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দলীয় অবস্থান।
কক্সবাজার-১ আসনের সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছে বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম ও এডভোকেট জহিরুল ইসলামের পুত্র রাসেদুল ইসলামের নাম। অন্যদিকে জোটের শরীক দল কে আসন ছেড়ে দিলে সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এএইচ সালাউদ্দিন মাহমুদও পেতে পারেন মনোনয়ন।
কক্সবাজার-২ আসন, মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় বর্তমান সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক আছেন সুবিধাজনক অবস্থানে।
পর্যটনের প্রাণ কক্সবাজার-৩ ও বৈশ্বিক রোহিঙ্গা সংকটে আলোচিত কক্সবাজার-৪ এ প্রার্থী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মাথাব্যাথার কারণ হতে পারে পারিবারিক সমঝোতা।
কক্সবাজার – ৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল আসন ধরে রাখতে রাত দিন কাজ করে চলেছেন এবং ভোটের রাজনীতিতে তিনি বেশ এগিয়ে গেছেন। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে তার, অন্যদিকে তার ভাই রামু উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরোয়ার কাজল এবং বোন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরোয়ার কাবেরীও নৌকা পেতে মরিয়া।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম ও সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র এডভোকেট ব্যারিস্টার মিজান সাঈদও মনোনয়ন দৌঁড়ে নিজেদের সামিল রেখেছেন। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান লে: কর্ণেল ( অব.) ফোরকান আহমেদ এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানও প্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থানে আছেন।
কক্সবাজার -৪ এ আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য বদি আইনি বাধা উত্তরণে ব্যর্থ হলে বর্তমান সংসদ সদস্য স্ত্রী শাহীন আক্তার কে আবারো মনোনয়ন পাইয়ে দিতে তৎপর আছেন। কিংবা তার সন্তান কেও প্রস্তুত করছেন বলে জানা গেছে। একটি সূত্র বলছে,বদির একটি মামলায় দন্ডেপ্রাপ্ত হওয়ায় তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হবেন তাই বিকল্প প্রার্থী প্রস্তুত রেখেছেন। এর বিপরীতে আরেকটি সূত্র বলছে, দন্ডিত হলে আইনী বাঁধার যে মেয়াদ তা শেষ হয়েছে তাই আব্দুর রহমান বদি নির্বাচন করতে বাঁধা নেই। এই আসন থেকে বর্তমান সাংসদের আপন ছোট ভাই তথা বদির শ্যালক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীও মনোনয়ন দৌড়ে নিজেকে অবতীর্ণ করেছেন।
বদি ও তার স্বজনদের ঠেকাতে ৬ জনের সম্মিলিত মনোনয়ন প্রত্যাশী জোট নিজেদের আলোচনায় আনার চেষ্টা করেছেন, অন্যদিকে জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও আগামী কমিটির আহবায়ক পদপ্রত্যাশী সোহেল আহমেদ বাহাদুরও সরব আছেন মাঠে।
সুত্র: টিটিএন
পাঠকের মতামত